প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষ নিয়োগব্যবস্থায় কর্মসংস্থান, জাতীয় অভিন্ন শ্রুতলেখক নীতিমালা প্রণয়ন, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ৮৫০ টাকা থেকে কমপক্ষে ৫ হাজার টাকায় উন্নীত করাসহ নানা সমস্যা নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ।
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করে তারা। এতে প্রায় এক শ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন, যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থী। চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, সেসব বিষয়ও তুলে ধরেন তাঁরা।
চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের আহ্বায়ক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘আগামীকাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল কোটা বাতিলের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মে যোগদানের ক্ষেত্রে বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা করার কথা থাকলেও এটি আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত কর্মে যোগদানের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থার সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রদান করার দাবি জানাই।’
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইব্রাহিম খলিল বলেন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান অন্তরায় শ্রুতলেখক–সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে ভারতীয় শ্রুতলেখক নীতিমালার আদলে এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবিত নীতিমালার আলোকে একটি জাতীয় অভিন্ন শ্রুতলেখক নীতিমালা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সরকার আমাদের সুবর্ণ নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। আমরা কেন যোগ্যতা অনুসারে বিশেষ ব্যবস্থায় চাকরি পাব না। সরকার আমাদের নামমাত্র ৮৫০ টাকা ভাতা দিচ্ছে। এই সামান্য টাকা দিয়ে কি মানুষের জীবন চলে? অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা পাঁচ হাজার টাকায় উন্নীত করা হোক।
গ্র্যাজুয়েট পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আলিফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের ৯ম থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দকৃত পদসহ যেসব জায়গায় আমাদের কাজের সুযোগ রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিতে হবে।’
পরিষদের সদস্য জান্নাত আক্তার বলেন, ‘সরকার আমাদের সুবর্ণ নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। আমরা কেন যোগ্যতা অনুসারে বিশেষ ব্যবস্থায় চাকরি পাব না। সরকার আমাদের নামমাত্র ৮৫০ টাকা ভাতা দিচ্ছে। এই সামান্য টাকা দিয়ে কি মানুষের জীবন চলে? অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা পাঁচ হাজার টাকায় উন্নীত করা হোক।’
‘করতে হলে টেকসই উন্নয়ন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা প্রয়োজন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ মোট ছয়টি দাবিতে ২০১৮ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছে।
‘করতে হলে টেকসই উন্নয়ন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা প্রয়োজন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ মোট ছয়টি দাবিতে ২০১৮ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছে। এর মধ্যে প্রধান তিনটি দাবি হচ্ছে—যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারের ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডে চাকরি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে বেকার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা; দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি, যাঁরা নিজ হাতে লিখতে পারেন না, তাঁদের চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা ও একাডেমিক পরীক্ষায় অভিন্ন জাতীয় শ্রুতলেখক নীতিমালা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন; সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ৮৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ৫ হাজার টাকায় উন্নীত করতে হবে।